Amazon

শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯

মে'র পাহাড় মেঘের বাহার -------------------- [পর্ব 3]



 মে'র পাহাড় মেঘের বাহার

হোটেল সানরাইস একদম উঁচু টিলাতে। অর্থাৎ সব থেকে ভালো ভিউ হওয়া উচিত। কিন্তু মেঘ আর মেঘ। প্রসঙ্গত বলে রাখি সানরাইস ছাড়াও বন্ দপ্তরের একটি বাংলো আছে। আরও কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হোটেল আছে। যেমন নম বুদ্ধ, শেরপা চ্যালেট, ইত্যাদি। সবাই প্রায় ২৭০০ থেকে ৩০০০ ভাড়া নেয় প্রতি রুম শুধু থাকার জন্য, তিন জনের। সান রাইস ২৭০০ করে নিয়েছে এক রাত ট্রিপিল বেড, শুধু থাকার। ঘর খুব একটা বড় নয়। প্রধান সমস্যা জল। পশ্চিমি টয়লেট থাকলেও জল ঘর প্রতি এক বাল্টি। ওই ঠাণ্ডায় জল লাগার কথা নয়। খাবারের দাম চড়া। রেট চার্ট ছবি নিয়েছি। দিয়ে দেবো। সকালে বেশ খিদে পাওয়ায় ভাত খেয়ে ফেললেও রাতে ম্যাগি খেয়েই কাটিয়ে দিলাম। প্রায় সব হোটেলে এক দাম। স্বাভাবিক। নীচের থেকে ওপরে নিয়ে যাওয়া কষ্ট সাধ্য, খরচা আছে।
এবার আসি কি দেখলাম। দুপুরে ঢুকলেও সন্ধার আগে পর্যন্ত ঘর বন্দী হয়ে রইলাম। তার কারন মেঘ ও সঙ্গে প্রচণ্ড জোরে বয়ে চলা হাওয়া, বৃষ্টি। বৃষ্টির পাহাড় এক অন্য মাধুর্য। কিন্তু সেটা দেখার জন্য এত উচ্চতায় ওঠার দরকার পড়ে না। এখানে আসা চাম্লং থেকে এভারেস্ট, মাকালু, লতসে সহ কাঞ্চন পরিবার হয়ে চমলহরি পর্যন্ত দর্শন করতে। সন্ধে বেলা খানিকটা কাঞ্চন পরিবারের পূর্ব দিকের মাথা দেখা গেলো। লজ্জায় জড়সড় হয়ে। আর একটা প্রাকৃতিক ঘটনা দেখলাম। বেশ খানিকটা নীচে মেঘ, সেই মেঘে নীচে বৃষ্টি হচ্ছে, এমনকি বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। মেঘ দেখেছি নীচে। কিন্তু তাতে বৃষ্টি ও বজ্র দেখি নি। সমস্যা শুরু রাতে। আমি ভুল করে গায়ে শুধু একটা জামা পড়ে শুয়ে পড়েছিলাম। মাঝ রাতে প্রচন্ড ঠাণ্ডায় ঠক ঠক করে কাপতে থাকলাম। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। উচ্চতা জনিত একটা সমস্যা ছিলই। মাথা ধরে ছিল। সেই সঙ্গে শ্বাসকস্টে যেন প্রান বেড়িয়ে যাওয়ার যোগাড়। হাতের কাছে পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। দুই টান মারতেই একদম ফিট। তবে ভালো ঘুম হয় নি।
পরের দিন অর্থাৎ ২২ মে ভোরে উঠে হোটেলের ছাদে গেলাম। অনেকেই উঠেছেন। কাঞ্চন পরিবারের কিছুটা দৃশ্যমান। আর দূরে ভাসা ভাসা যেন এভেরেস্ট মাকালু ইত্যাদি। ওই না দেখাই বলা যায়। নেই মামার থেকে কানা মামা ভালো। এই রকম বা তার থেকে ভালো পশ্চিম সিকিম থেকে দেখা যায়। টাইগার হিল থেকেও মাকালু বা লতসে দেখেছি এর থেকে ভালো। হয়তো আবার কখনো এভারেস্ট।
গাড়ি ৭ঃ৩০ এ বলা ছিল। সেই বোলেরো এসে গেলো। মালপত্র চাপিয়ে নেমে এলাম মানেভঞ্জন। সঙ্গে সেই মেঘে ঢাকা অত্যাচারি ১০ কিমি রাস্থা ও বিপদ সঙ্কুল পুরো ৩৭কিমি। মাঝে একটু টুম্লিঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রাতরাশ। মানেভঞ্জনে আবার গাড়ি বদল। এবার লেপচাজগত। সেই গল্প আবার পরের দিন।

কুয়াশা মাখা ছবি যতটা সম্ভব কম এডিট করে দিলাম।
 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন